ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলায় শতশত গ্রাহকের অন্তত ‘অর্ধকোটি টাকা’ নিয়ে পালিয়ে গেছে ‘সকস বাংলাদেশ’ নামের একটি এনজিও। এ ঘটনায় এনজিওটির ভাড়া অফিস সিলগালা করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। প্রতারিত গ্রাহকরা মামলা দায়ের ও মানববন্ধন করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না।
ক্ষুব্দ গ্রাহক ও স্থানীয়রা জানান, বেশ কিছুদিন ধরে ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদের পাশে ওয়াসিম ভবনের দ্বিতীয় তলায় ভাড়া বাসায় অফিস নিয়ে বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিদের থেকে বাড়তি সুদের প্রলোভন দেখিয়ে সঞ্চয় ও ডিপিএস সংগ্রহ করছিলেন ‘সকস বাংলাদেশ’ নামের একটি সংস্থা। এছাড়াও গ্রাহকদের সহজ শর্তে মোটা অংকের ঋণ দেয়ার কথা বলে ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা জামানতও নেয় প্রতিষ্ঠানটি।
স্থানীয় রিকশা চালক আবুল কাশেম জানান, ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে তিনি এ প্রতিষ্ঠানে ঋণ দেয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। ব্যাংক বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিতে অনেক ঝামেলা। তাই তিনি সহজ শর্তে ২০ হাজার টাকা দিয়ে ২ লাখ টাকা ঋণের আবেদন করেছেন। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই ওই টাকা দিয়ে ভাঙা ঘরটি ভেঙে নতুন ঘর তোলার স্বপ্ন ছিল তার। কিন্তু ঋণ গ্রহণের তারিখে অফিসে এসে দেখেন তালা মারা। তিনি জানান, আশপাশের লোকজন থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকার উপরে হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক এনজিওটি।
এ ঘটনায় দাগনভূঞা থানায় একটি মামলা করেছেন উপজেলার রামানন্দপুর গ্রামের মিন্নত আলী পণ্ডিত বাড়ির হাসিনা মমতাজ নামের এক গৃহিনী। ওই মামলায় ভাড়া বাসার মালিক আমান উল্লাহ স্বপন হোটেলের স্বপন ও সকস বাংলাদেশের দাগনভূঞার ব্যবস্থাপক রানাকে আসামি করা হয়েছে।
দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা আক্তার তানিয়া জানান, বুধবার সকালের দিকে বিষয়টি জানতে পেরে আমি সরেজমিন পরিদর্শন করি। সেখানে ২০ থেকে ৩০ জন প্রতারণার শিকার হওয়া গ্রাহকদের দেখা পাই। তারা জানান, তারা কয়েকদিন আগে জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা করে সঞ্চয় দিয়েছেন ১ লাখ টাকা হারে ঋণ পাওয়ার জন্য। কিন্তু পূর্ব নির্ধারিত দিনে ঋণ নিতে এসে দেখেন কার্যালয়ের তালা ঝুলানো। এমতাবস্থায় ওই কার্যালয়টি সিলগালা করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করতে দাগনভূঞা থানাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
দাগনভূঞা থানার ওসি ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, এনজিও প্রতারণার শিকার হাসিনা মমতাজ নামের এক নারী বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। কি পরিমাণ টাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির লোকজন পালিয়েছে তা এখনো বলা যাচ্ছে না।