ইসরায়েলে ক্ষমতার পালাবদল সামনে রেখে সহিংসতার আশঙ্কা প্রকাশ করে বিরল এক সতর্কতা জারি করেছে দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা। সিন বেট নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান নাদাভ আরগামান কোনো নাম উল্লেখ না করে শনিবার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা অতি সহিংস ও উসকানিমূলক পরিস্থিতি তৈরির লক্ষণ দেখতে পেয়েছি, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ‘এ প্রবণতা নির্দিষ্ট কিছু গোষ্ঠী বা ব্যক্তিকে এমনভাবে প্রভাবিত করতে পারে যে তারা সহিংস হয়ে উঠতে পারে এবং বেআইনি কিছু করে বসতে পারে, যা হয়ত শারীরিক হামলা পর্যন্ত গড়াতে পারে।’ খবর রয়টার্সের
ইসরায়েলের পার্লামেন্টে এ সপ্তাহেই নতুন সরকার গঠিত হতে পারে, যার মধ্য দিয়ে আবসান হতে পারে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর শাসনের, যিনি রেকর্ড এক যুগ ধরে ক্ষমতায়। ইসরায়েলে গত ২৩ মার্চের জাতীয় নির্বাচনে কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় সমর্থন অর্জনে ব্যর্থ হলে সুযোগ পান পার্লামেন্টের বিরোধী দলীয় নেতা ইয়ায়ের লাপিদ। গত বুধবার তিনি ঘোষণা দেন, একটি জোট সরকার গঠনের প্রয়োজনীয় সমর্থন জোটাতে পেরেছেন তিনি।
মধ্যপন্থি লাপিদ একটি অদ্ভুত জোট গড়ে সরকার গঠন করতে চলেছেন, যেখানে বামপন্থি, উদারপন্থি, কট্টরপন্থি, জাতীয়তাবাদী ও ধর্মীয় দল রয়েছে; একইসঙ্গে ইসরায়েলের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সরকারের অংশ হতে চলেছে একটির আরব ইসলামি দল। ক্ষমতা ধরে রাখার অন্তিম মুহূর্তের চেষ্টা হিসেবে একটি অনলাইন পোস্টে নেতানিয়াহু দেশবাসীকে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, ওই জোট ‘একটি বিপজ্জনক বামপন্থি সরকার’ হতে চলেছে।
নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যার নাম সংবাদমাধ্যমে এসেছে; কট্টরপন্থি ইয়ামিনা দলের নেতা সেই নাফতালি বেনেটের প্রতি কিছু ডানপন্থি গোষ্ঠী দারুণ ক্ষুব্ধ, কারণ তিনি মধ্যপন্থি লাপিদের সঙ্গে জোট করেছেন। এর জেরে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক পোস্টে বেনেটকে আক্রমণ করা হচ্ছে।
কেননা, নির্বাচনের আগে বেনেট প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি মধ্যপন্থি লাপিদ, অথবা কোনো আরব দলের জোটে যোগ দেবেন না। এখন লাপিদের নতুন জোটে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর বেনেটের নিরাপত্তা জোরদার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। এদিকে ডানপন্থিরা লাপিদের সমর্থকদের বাসার সামনে বিক্ষোভ করেছে, যাতে তারা সরকারে যোগদান থেকে বিরত থাকেন। এ পরিস্থিতিতে উসকানিমূলক বক্তব্য ও পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আরগামান।