দালালের মাধ্যমে কাজ না করায় রাজউক ভবনে এক আর্কিটেক্টসহ একটি প্রতিষ্ঠানের দুই কর্মকর্তাকে পিটিয়ে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বনানী থানা ছাত্রলীগের দুই সহসভাপতিসহ সাতজনের বিরুদ্ধে। গত ১৫ মার্চ দুপুরে রাজউক ভবনের ষষ্ঠ তলায় মসজিদের পাশে এ চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই রাতেই সাতজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর বনানী থানায় মামলা করেন আর্কিটেক্স লিমিডেট নামে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক্সিকিউটিভ অ্যাডমিন ভুক্তভোগী মো. কামরুল হাসান। পরে ওই রাতেই প্রধান আসামি বনানী থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো. ইনজামামুল হাসানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালতের নির্দেশে তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন।
এছাড়া গতকাল রবিবার মহাখালীর রাজউক ভবনের স্টোররুম থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মামলার আরেক আসামি বনানী থানা ছাত্রলীগের আরেক সহসভাপতি রাকিব হোসেনকে। তিনি বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। মামলার বাদী ভুক্তভোগী কামরুল হাসান জানান, একটি নকশার অনুমোদন কাজের জন্য গত ১৫ মার্চ দুপুরে তার প্রতিষ্ঠানের সহকারী আর্কিটেক্ট ফাহিম শাহারিয়ারকে নিয়ে তিনি রাজউক অফিসের ড্রাফসম্যান কামরুল ইসলামের কার্যালয়ে যান। কিন্তু ওই কর্মকর্তা অফিসে না থাকায় তারা সেই কক্ষেই অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় অচেনা কয়েকজন যুবক নিজেদের ছাত্রলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে দালালদের মাধ্যমে কাজ না করায় ওই দুই কর্মকর্তাকে গালমন্দ করেন
এবং তাদের কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। একপর্যায়ে ড্রাফটসম্যান কামরুল ইসলাম কক্ষে ফিরে আসেন। সেই সময় তারা চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে যুবকরা ড্রাফসম্যানের সামনেই তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। প্রতিবাদ করলে ওই যুবকরা তাদের মারধর করতে করতে কক্ষের বাইরে নিয়ে ৩১ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। ঘটনার সময় দুই যুবক একজন আরেকজনকে ইনজামামুল ও রাকিব নাম ধরে ডাকছিল। বিষয়টি রাজউক কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানান ভুক্তভোগীরা। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ওই দিন রাতেই বনানী থানায় মামলা করেন কামরুল হাসান।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহাখালী পুলিশ বক্সের ইনচার্জ এসআই রাজীব তালুকদার আমাদের সময়কে জানান, মামলার দ্বিতীয় আসামি রাকিব রাজউক ভবনে চাঁদাবাজির একই ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে খবর পেয়ে তারা গতকাল সকালে অভিযানে যান। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান রাকিব। পরে দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা তল্লাশির পর বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ভবনের ষষ্ঠ তলায় বাথরুমের ওপর অন্ধকার স্টোররুমে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় রাকিবকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তিনি পুলিশ হেফাজতে আছেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। এ চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে ইনজামামুল ও রাকিবের ব্যাপারে বনানী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শাহ আলম বলেন, চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার তাদের দুই সহসভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।