বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা টানা তৃতীয় দিনের মতো ১০০ পার হয়েছে। তৃতীয় দিনে এসে মৃত্যু হয়েছে ১০২ জন। এর আগের দুইদিন ১০১ জন করে মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সব মিলিয়ে এপ্রিল মাসে বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে ১ হাজার ৩৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর গত তিন দিনে মৃত্যু হলো মোট ৩০৪ জনের। বাংলাদেশে গত তিন দিনের মৃত্যুহার বিবেচনা করলে করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রতি ১৫ মিনিটে একজনের মৃত্যু হচ্ছে। আর এপ্রিল মাসের মৃত্যু হার বিবেচনা করলে, করোনা আক্রান্ত হয়ে এই মাসে প্রতি ১৮ মিনিটে একজনের মৃত্যু হচ্ছে।
দেশটিতে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়ে কারও মৃত্যুর কথা সর্বপ্রথম ঘোষণা করা হয়েছিল গত বছরের ১৮ মার্চ। তবে গতকালের আগে পর্যন্ত এই ১৩ মাসে মৃতের সংখ্যা এর আগে কখনোই তিন অংক ছোঁয়নি।
গতকাল শনিবারই বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি। ‘মহামারি সর্বোচ্চ মাত্রার সংক্রমণের দিকে এগোচ্ছে’ বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান সতর্কবাণী উচ্চারণের পরদিনই বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর এই তথ্য জানা গেল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ রোববার বাংলাদেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৬৯৮ জন। এ নিয়ে বাংলাদেশে মোট ৭ লাখ ১৮ হাজার ৯৫০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে কোভিড আক্রান্তের হার ১৯.০৬ শতাংশ। অন্যদিকে গত একদিনে সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ১২১ জন আর মোট সুস্থ হয়েছেন ৬ রাখ ১৪ হাজার ৯৩৬ জন। ১৯ হাজার ৪০৪ টি নমুনা পরীক্ষা করে এসব তথ্য জানা গেছে।
শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ড. টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস বলেছেন, ‘নতুন শনাক্ত আর মৃত্যুর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েই চলেছে। বিশ্বজুড়ে প্রতি সপ্তাহে নতুন শনাক্ত হওয়ার সংখ্যা গত দুইমাসে দ্বিগুণ হয়ে গেছে।’
গত বছরের মার্চের ৮ তারিখে দেশটিতে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে কাউকে শনাক্ত করার তথ্য দিয়েছিল স্বাস্থ্য বিভাগ। এরপরের দুই মাস দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা তিন অঙ্কের মধ্যে থাকলেও সেটা বাড়তে বাড়তে জুলাই মাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়।
চিকিৎসক এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, হাসপাতালগুলোর ওপর যে হারে চাপ বাড়ছে, তাতে করোনাভাইরাসের চিকিৎসা সেবা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।