করোনায় আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সিটি স্ক্যান করানোর জন্য আবারও হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় দফার পরীক্ষায়ও করোনা পজেটিভ হওয়ার পর তাকে সিটি স্ক্যানসহ শারীরিক কিছু পরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত নেয় মেডিকেল বোর্ড।
গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বরের ভাড়াবাসা ফিরোজা থেকে আজ মঙ্গলবার রাত ৯টা ৩৮ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপারসনকে বহনকারী গাড়িটি বেরিয়ে যায়। হাসপাতালে গিয়ে পৌঁছায় রাত ১০টার বাজার কয়েক মিনিট পর।
জানা গেছে সেখানে সিটি স্ক্যানসহ শারীরিক কিছু পরীক্ষা করানো হবে। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক জানান, সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট দেখার পর সিদ্ধান্ত হবে, তার চিকিৎসা বাসায় রেখে হবে নাকি হাসপাতালে।
এদিকে খালেদা জিয়া হাসপাতালে যাওয়ার আগে রাত ৮টার দিকে তার বাসভবন ‘ফিরোজার’ যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। তারও এক ঘণ্টা আগে বাসায় যান চিকিৎসক টিমের অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকী, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও ডা. মোহাম্মদ আল মামুন।
এর আগে গত ১৫ এপ্রিল প্রথমবার একই হাসপাতালে সিটি স্ক্যান করা হয় খালেদা জিয়াকে। তখন তার চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, রিপোর্টে ফুসফুসে প্রভাব ক্লিনিকালি অত্যন্ত মিনিমাম। যেটা মাইল পর্যায়েও পড়ে না। রিপোর্ট অনেক ভালো।
গত বছর ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে দুই মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। এরপর আরও দুইদফা তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। কারাগার থেকে মুক্তির পর তিনি গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। একদিনের জন্যও তিনি বের হননি। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর দ্বিতীয়বারের মতো চিকিৎসার জন্য বাসার বাইরে বের হলেন তিনি।
খালেদা জিয়ার করোনা পজেটিভ শনাক্ত হওয়ার পর প্রখ্যাত ‘বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন’ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এফএম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের টিম গুলশানের বাসায় তার চিকিৎসা শুরু করে। ‘ফিরোজা’র বাসায় তিনি ছাড়াও আরও আটজন করোনায় আক্রান্ত হন। আক্রান্তের ১৬ দিন পর গত শনিবার খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় দফায় করোনা পরীক্ষা করানো হলে আবারও পজেটিভ আসে। ওইদিন তার বাসভবনের ১৪ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়। ১০ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ আসলেও খালেদা জিয়াসহ চারজনের পজেটিভ আসে।
শনিবার রাতেই তার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল টিমের প্রধান অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকীসহ আরও কয়েকজন চিকিৎসক গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজায়’ গিয়ে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। পরে অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘খালেদা জিয়া শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ আছেন। এখন ভালো আছেন। ওনার অবস্থা স্থিতিশীল। আমরা মনে করছি, আগামী ৫-৬ দিনের মধ্যে কোভিড নেগেটিভ হয়ে যাবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোভিডজনিত বিপজ্জনক সময়টা ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) পার হয়ে গেছেন। কোভিড রোগীদের যে সকল বিপদ থাকে আমরা মনে করছি তিনি আশঙ্কামুক্ত।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাসায় আসার পর এক বছর তিনি কোয়ারেন্টিনের মতোই ছিলেন। এ সময় সংক্রমণের ভয় থাকায় কোনো পরীক্ষা করতে পারিনি। কোভিড রিলেটেড নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মনে হয়েছে, তার শারীরিক অন্যান্য পরীক্ষা নিরীক্ষা করা দরকার।