বাংলাদেশ

বেতাগী বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, রাতে কুপিয়ে জখম

বরগুনার বেতাগী উপজেলার সরিষামুড়ি ইউনিয়নে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একজনকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউসুফ শরীফের বিরুদ্ধে। সরিষামুড়ি ইউনিয়নের ভোড়া গ্রামে মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহত যুবকের নাম রফিক বিশ্বাস (২৪)। তিনি সরিষামুড়ি ইউনিয়নের ভোড়া গ্রামের সালাম বিশ্বাসের ছেলে। তাকে নিজের সমর্থক বলে দাবি করেছেন নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ইমাম হোসেন শিপন।
প্রত্যক্ষদর্শী তারেক বিশ্বাস জানান, ভোড়া এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য প্রার্থী ফোরকান সিকদারের বাড়িতে কর্মিসভা থেকে ফিরছিলেন রফিক। সে সময় ইউসুফ শরীফের ছেলে আজিম, জয়নাল মেম্বরের ছেলে সোহেল, টিটু মেম্বারসহ বেশ কয়েকজন ইউসুফের বাড়ির সামনে অবস্থান করছিল। রফিক সেই পথে যাওয়ার সময় তাকে ডেকে পাশের একটি ঘেরে নিয়ে কুপিয়ে যখম করা হয়। এ সময় ইউসুফ শরীফের নিরাপত্তায় মোতায়েন বেতাগী থানা ও চান্দখালী পুলিশ ফাঁড়ির পাঁচজন পুলিশ ওই বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন।
চিৎকার শুনে তারা রফিককে উদ্ধার করে বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
বেতাগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিসক রবীন্দ্রনাথ সরকার জানান, আহত রফিকের ঘাড়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই তাকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে রফিকের চাচা জয়নাল বিশ্বাস বলেন, রফিক ঢাকায় একটি কোম্পানিতে চাকরি করে। নবজাতক সন্তানকে দেখতে সপ্তাহখানেক আগে বাড়িতে আসে। তখন ইউসুফের ছেলেরা নির্বাচনে তাদের পক্ষ হয়ে কাজ করতে বলে রফিককে। তাতে রাজি না হওয়ায় ইউসুফ ও তার ছেলেরা ক্ষুব্ধ ছিল। এ কারণে সকালে রফিকদের তিনটি ঘরে আগুন দেয়। আর রাতে পুলিশের সামনে রফিককে কুপিয়ে জখম করে।
সরিষামুড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে নৌকার প্রার্থী ইমাম হোসেন শিপন বলেন, ইউসুফ শরীফ ও তার ছেলেরা চার মাস আগে আমাকে কুপিয়ে যখম করেছিল। প্রায় পঙ্গু অবস্থায় আমি নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। জামিন নিয়ে ইউসুফ গং এলাকায় ফিরেই একের পর এক তাণ্ডব চালাচ্ছে। পুলিশের সামনেই আমার ওপর হামলা হয়েছিল। আর আজকেও পুলিশি পাহারায় আমার সমর্থককে কোপানো হয়েছে। ইউসুফ ও তার ছেলেদের জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তার না করলে তারা একের পর এক তাণ্ডব চালাতেই থাকবে।
এ বিষয়ে কথা বলতে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউসুফ শরীফের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। তার ছেলে আজীমের নম্বরটিও বন্ধ রয়েছে।
বেতাগী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু জানান, পুলিশ আহত অবস্থায় রফিক নামের একজনকে উদ্ধার করে বেতাগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। পুলিশের উপস্থিতিতে হামলার প্রসঙ্গে ওসি তপু বলেন, পুলিশ ওই এলাকায় টহলরত থাকলেও ঘটনাস্থল থেকে দূরে ছিল।
সরিষামুড়ি ইউনিয়নের কালিকাবাড়িতেই ২০২০ সালের ২০ নভেম্বর বিকেলে হামলার শিকার হন বর্তমান চেয়ারম্যান ইমাম হাসান শিপন। সে ঘটনায় ইউসুফ, তার দুই ছেলেসহ ১৪ জনকে আসামি করে বেতাগী থানায় মামলা হয়। ওই দিনের পর থেকে পলাতক ছিল ইউসুফ ও তার পরিবার। কারাভোগ ছাড়াই উচ্চ আদালত থেকে গত বুধবার জামিন পান ইউসুফ শরীফ ও তার দুই ছেলেসহ অন্য অভিযুক্তরা। গত শুক্রবার এলাকার আসেন ইউসুফ। ওই দিনও ইউসুফ ও শিপন সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচজন আহত হয়।

সম্পর্কিত

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button