বাংলাদেশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোদির ঢাকা সফর বিরোধী বিক্ষোভে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ১, আহত ২০

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফর ও শুক্রবার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে বিক্ষোভে হামলার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের গুলিতে আশিক (২০) নামের একজন নিহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে আহত হয়েছেন আরো অন্তত ২০ জন। শুক্রবার বিকেলে এ বিক্ষোভ ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, গুলিবিদ্ধ আশিক সন্ধ্যা ৬টার দিকে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি জেলা শহরের দাতিয়ারার সাগর মিয়ার ছেলে।
বিকেলে জেলা শহরের কাউতুলীতে মাদরাসাছাত্রদের সাথে বিক্ষোভে অংশ নিয়ে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হন।
এ দিকে নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে মাদরাসাছাত্ররা হাসপাতাল থেকে নিহতের লাশ নিয়ে শহরের বিভিন্ন সড়কে মিছিল করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আরিফুজ্জামান হিমেল জানান, জরুরি বিভাগ থেকে মৃত্যু ঘোষণা করার পর লাশটি হাসপাতাল থেকে নিয়ে যায় বিক্ষুব্ধরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম বলেন, ‘নিহত হয়েছে, এমন একটি কথা আমরা শুনতে পেয়েছিলাম। তবে তা এখনো নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।’
এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকায় সফরকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। শুত্রুবার দুপুর আড়াইটায় শহরের প্রধান সড়ক টিএ রোডে মাদরাসাছাত্ররা ব্যাপক বিক্ষোভ করেন। এ সময় প্রধান সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষুব্ধরা সড়কের বিভিন্ন স্থানে টায়ার পুড়িয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে রেললাইনে আগুন দিয়ে স্টেশনে বিক্ষোভ করা হয়। রেল স্টেশনের সিগন্যাল, মাস্টার রুম, কন্ট্রোল রুমসহ রেল কর্মকর্তাদের কক্ষে ব্যাপক ভাংচুর করা হয় এ সময়। সিগন্যাল বক্স ভেঙে ফেলায় ঢাকার সাথে সিলেট ও চট্টগ্রামের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এ দিকে ঢাকাগামী কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে প্রবেশ করার সময় বিক্ষুব্ধরা পাথর নিক্ষেপ করলে ট্রেনটি ফিরে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জেলা পরিষদ কার্যালয়ে বিকেল সোয়া ৫টায় ব্যাপক হামলা চালানো হয়। শহরের কাউতলী, ভাদুঘরে ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়। সড়কে আগুন ধরিয়ে রাস্তায় অবরোধ করা হয়। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিশ্বরোড, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুহিলপুর, নন্দনপুর, মজলিশপুর, ঘাটুরাসহ বিভিন্ন স্থানে সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাথে দেশের বিভিন্ন স্থানে দূরপাল্লা সকল যানবাহন তাৎক্ষণিক বন্ধ হয়ে যায়।
এ ছাড়া বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের সময় জেলা পরিষদ ভবনের সামনে, পৌর মুক্তমঞ্চ, পৌর মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুারাল ভেঙে ফেলা হয়। একইসাথে স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে আলোকসজ্জা ও সড়ক সজ্জিতকরণ ব্যানার ফেস্টুন ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা। শহরের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা সিসিটিভি ক্যামেরাও ভাংচুর করা হয়।
বিক্ষুব্ধ হেফাজত কর্মীদেরকে এ সময় নরেন্দ্র মোদিবিরোধী স্লোগান দিতে দেখা যায়।

সম্পর্কিত

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button