এম্বুলেন্স বহন করতে রাজি হয়নি। তাই করোনায় মারা যাওয়া মায়ের মৃতদেহ তার ছেলে এবং জামাই মোটর সাইকেলে করে বাড়ি নিয়ে গেলেন। পথে তাদেরকে থামিয়েছিলেন একজন পুলিশ সদস্য। তাদেরকে লাশ এভাবে নিতে দেখে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। কিন্তু সহায়তায় এগিয়ে আসেননি। তিনি কোনো গাড়িও ডেকে দেননি। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে। এ দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ভারতকে হতাশায় ডুবিয়েছে। একের পর এক মৃত্যু সেখানে হতাশা বাড়াচ্ছে। সারাদেশে মানুষ কতো অসহায় হয়ে পড়েছে তার চিত্র ক্রমশ ফুটে উঠছে। রাস্তার পাশে লাইন দিয়ে রাখা হয়েছে মৃতদেহ। এগুলো দাহ করা হবে। মারাত্মক অসুস্থ মানুষ হাসপাতালের বাইরে রাস্তায় শুয়ে আছেন চিকিৎসার জন্য। হাসপাতালের বাইরে যেন খোলা আকাশের নিচে আরেক হাসপাতাল। গণহারে চিতায় জ্বলছে দেহ। কয়েক সপ্তাহ ধরে এমন সব বীভৎস দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অন্ধ্র প্রদেশের ওই ঘটনা। সেখানে করোনায় মারা যান এক নারী। তার ছেলে এবং জামাই মৃতদেহ বাড়ি নেয়ার জন্য এম্বুলেন্স খুঁজেছেন। কিন্তু কোনো এম্বুলেন্সের চালক লাশ পৌঁছে দিতে রাজি হয়নি। তাই তার ছেলে এবং জামাই মৃতদেহ স্যান্ডউইচের মতো পাঁজাকোলা করে মোটর সাইকেলে তুলে নিয়েছেন দু’জনের মাঝখানে। ঘটনাটি ওই প্রদেশের শ্রীকাকুলামের পালাসা এলাকার। মৃত নারী সেখানকার চেঞ্চু উপজাতির। তার করোনার লক্ষণ দেখা দেয়ার পর নীলামনি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় সিটি স্ক্যান করতে শ্রীকৃষ্ণ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। কিন্তু স্ক্যান রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে করতে তিনি মারা যান। কান্নায় ভেঙে পড়েন তার ছেলে। উপায়হীন হয়ে এম্বুলেন্স বা অন্য কোনো যান খুঁজতে থাকেন, লাশ বাড়ি নেয়ার জন্য। কিন্তু মৃতদেহ থেকে করোনা ছড়িয়ে পড়বে এই আশঙ্কায় কেউই তাতে রাজি হয়নি। এমন অবস্থায় মৃত নারীর ছেলে এবং জামাই সিদ্ধান্ত নেন তাদের মোটরসাইকেলে করেই লাশ নিয়ে যাবেন গ্রামে। ভাবনা অনুযায়ী তারা তাই করেন। এ বিষয়ে শ্রীকাকুলামের এসপি অমিত বাহাদুর বলেন, ওই পরিবারটি জরুরি প্রয়োজনে ১০৮ নম্বরে কল করেনি। এটা সরকারি এম্বুলেন্স সার্ভিসের নম্বর। করোনা ভাইরাসে মৃতদের জন্য ভাল সেবা দিয়ে থাকে অন্ধ্র প্রদেশ। কিছু বেসরকারি অটোও এক্ষেত্রে ওই নারীর মৃতদেহ নিয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানাতে পারে। এটা হতে পারে তাদের আতঙ্কের কারণে। ফলে বাধ্য হয়ে মৃত নারীর ছেলে এবং জামাই মোটরসাইকেলে করে লাশ বাড়ি নিয়ে গেছেন।