যশোরের চৌগাছায় সন্তানদের অবহেলা সহ্য করতে না পেরে সালেহা খাতুন (৯২) নামে এক বৃদ্ধা আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি নারায়ণপুর গ্রামের মৃত জাকির হোসেনের স্ত্রী।
সোমবার বিকেলে ছোট ছেলের বাড়িতে টিনশেড ঘরের আড়ার সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে সন্ধ্যায় পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে চৌগাছা থানায় নিয়ে যায়। পরে মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার আসর নামাজের পর তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বৃদ্ধার কয়েকজন স্বজন জানিয়েছেন, তার চার ছেলে ও পাঁচ মেয়ে রয়েছে। তারা সকলেই প্রতিষ্ঠিত ও স্বাবলম্বী। বড় ছেলে উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি যশোর জেলা শহরে নিজের বাড়িতে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে থাকেন। মেঝ ও সেজো ছেলে গ্রামে কৃষিকাজ করেন। তাদের একজনের চৌগাছা উপজেলা শহরে বাড়ি রয়েছে। আর ছোট ছেলে প্রবাস থেকে ফিরে চৌগাছা শহরে মুদি ব্যবসা করেন। কিন্তু কোনো ছেলে-মেয়ে তাকে ঠিকমতো দেখাশোনা করতেন না। ছোট ছেলের সংসারে থাকতেন ও অন্য দুই ছেলের সংসারে পর্যায়ক্রমে খাওয়া-দাওয়া করতেন তিনি। তবে ছোট ছেলে ও পুত্রবধূ ঠিকমতো যত্ন নিতেন না। এমনকি বৃদ্ধা টয়লেট নষ্ট করে ফেলবেন বলে বাড়ির পাকা টয়লেটে তাকে যেতে দেয়া হতো না বলেও জানিয়েছে স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের মতে, এ নিয়ে সম্প্রতি ছেলে ও পুত্রবধূর সাথে মনোমালিন্য হয় তার। যার ফলে ছোট ছেলে তাকে বের করে দিতে চান। আবার অন্য ছেলেরাও তাকে নিতে চায় না। এমনকি মেয়েরাও মায়ের খোঁজ নেন না। এই চিন্তায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে তিনি সোমবার সন্ধ্যার একটি টিনশেড ঘরের আড়ার সাথে দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইউসুফ আলী জানান, বৃদ্ধার লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এত বয়স্ক একজন মানুষ গলায় রশি দিয়ে ঝুলে পড়া কিছুটা অস্বাভাবিক। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না ঠিক কি কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।