গতকাল রবিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৪ ও ২৯ ধারায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস।
সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহীর মতিহার থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক ইমরান হোসেন। তিনি জানান ,অভিযোগটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।তার নামে ভুয়া জিমেইল অ্যাকাউন্ট খুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে বিভিন্ন ধরনের মেইল প্রেরণ করার কারণে রাজশাহীর মতিহার থানায় তিনি এই অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগপত্রে অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস উল্লেখ করেন, ‘Zannatul Ferdous নামীয় একটি ভুয়া ই-মেইল আইডি খুলে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২১ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের স্টিয়ারিং কমিটির নির্বাচনে জনৈক প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী সম্পর্কে কম্পিউটার বা ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট বা ডিজিটাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে কুৎসা রটনা করেছেন। উক্ত ইমেইলটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য শিক্ষক তাদের স্ব স্ব ই-মেইল প্রাপ্ত হয়েছেন, যা বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খানম, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী জাহিদুর রহমান, আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অমিতাভ সাহা, আমাকে অবহিত করেছেন।’
অভিযোগপত্রে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘আমি দীর্ঘ ২১ বছর যাবৎ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অত্যন্ত সততা, দক্ষতা এবং নিষ্ঠার সাথে শিক্ষকতা করে আসছি। শিক্ষকতা জীবনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ সহকারী প্রক্টর, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য , প্রাধ্যক্ষ, ছাত্র উপদেষ্টা ও সিন্ডিকেট সদস্যসহ জেড. এইচ. সিকদার ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি, ভেদরগঞ্জ, শরীয়তপুর এর উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি। আমার নামে ভুয়া ই-মেইল আইডি খুলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষকের ইমেইলে যে বা যারা উক্ত মেইলটি প্রেরণ করেছেন তারা কম্পিউটার তথা ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে পরিচয় প্রতারণা বা ছদ্মবেশ ধারণের পাশাপাশি ব্যক্তিগত ভাবে আমার সম্মানহানি করেছেন, যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৪ এবং ২৯ ধারা মতে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
এ বিষয়ে থানায় অভিযোগকারী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘আমার সম্মানহানি করার জন্য এবং নির্বাচনের এক প্রার্থীর সম্পর্কে অপপ্রচার করার জন্যই প্রতিপক্ষের কেউ এটা করে থাকতে পারেন। আমি এইসব কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ভবিষ্যতে আমার নাম ব্যবহার করে এর চেয়েও ভয়াবহ কোন কিছু প্রচারণা চাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে আমি মনে করছি। এবং সেই ভয় থেকেই আমি অভিযোগটা করেছি।’
এদিকে শিক্ষকদের কাছে পাঠানো সেইসব জি-মেইলের কয়েকটি কপিতে দেখা যায়, সেখানে আগামী ২৪ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের প্রার্থী অধ্যাপক সুলতান উল ইসলামের নামে বিভিন্ন ধরনের কুৎসা রটানো হয়েছে।