বাংলাদেশী গৃহকর্মী আবিরন বেগম হত্যা মামলার রায় দিয়েছেন সৌদির রিয়াদের একটি আদালত। গতকাল রোববার এই রায়ে গৃহকর্তী আয়েশা আল জিজানিকে মৃত্যদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া বাসার কর্তা বাসেম সালেমকে তিন বছর দুই মাস কারদণ্ড ও ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা করা হয়েছে।
একই সঙ্গে তাদের ছেলে ওয়ালিদ বাসেম সালেমকে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। সেখানে তাকে সাত মাস রাখা হবে। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও রায়ের তথ্য জানানো হয়েছে। আদালত আসামিপক্ষকে আপিলের জন্য এক মাস সময় দিয়েছেন।
খুলনার পাইকগাছার রামনগরের বাসিন্দা আবিরন বেগম ছয় বোনের মধ্যে মেঝ ছিলেন। নিঃসন্তান হওয়াতে ২০ বছর আগে তার স্বামী তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন।
তারপর চলে আসেন বাবার বাড়িতে। বোনদের পড়াশোনার খরচ যোগাতে ২০১৭ সালে চলে যান সৌদির রিয়াদে। দুই বছর তিন মাস পর ২০১৯ সালের ২৪শে অক্টোবর কফিনে মোড়ে আবিরনের মরদেহ দেশে আসে। মরদেহের সঙ্গে থাকা আবিরনের মৃত্যুসনদে মৃত্যুর কারণের জায়গায় লেখা ছিল মার্ডার (হত্যা)। মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৪০ বছরের বেশি বয়সী আবিরনকে পিটিয়ে, গরম পানিতে ঝলসে, অর্থাৎ বিভিন্ন নির্যাতন করে সৌদি আরবে খুন করা হয়। সাত মাস সেখানকার এক মর্গে ছিল আবিরনের মরদেহ। আবিরন হত্যাকাণ্ডের পর তার বোন রেশমা খাতুন গণ্যমাধ্যমকে বলেছিলেন, আবিরন যে বাসায় কাজ করতেন, সেখানে মোট আটজন পুরুষ থাকতেন। তারা আবিরনকে যৌন নির্যাতনও করতেন। খাবার খেতে না দেয়া, গ্রিলে মাথা ঠুকে দেওয়াসহ নানা নির্যাতন তো ছিলই। আবিরন দুই বছরের বেশি সময় কাজ করলেও তার পরিবার মাত্র ১৬ হাজার টাকা পেয়েছে। দালাল চক্রসহ অন্যরা আবিরনের বেতনের টাকা আত্মসাৎ করেছে।