প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা ভাতার দাবি রোহিঙ্গাদের: ভাসানচরে বিক্ষোভ, ভাঙচুর

সাহসী খবর-, নোয়াখালী- মাসে পাঁচ হাজার টাকা ভাতাসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার দাবিতে নোয়াখালীর ভাসানচরে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর চালিয়েছে রোহিঙ্গারা। তাদের অন্য দাবির মধ্যে আছে মানসম্পন্ন রেশন, কর্মসংস্থান এবং পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা।

জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) প্রতিনিধি দল তাদের শিবির পরিদর্শন করতে এলে এই মিছিল করে তারা। দুজন সহকারী হাইকমিশনারসহ ১৪ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সামনে সোমবার বেলা ১১টার দিকে তারা বিক্ষোভ করেন।ভাসানচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহে আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকালে ইউএনএইচসিআরের সহকারী হাইকমিশনার রউফ মাজাও এবং গিলিয়ান ট্রিগসসহ ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের সুযোগ সুবিধা পর্যবেক্ষণ করতে আসেন। ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি দল এই প্রথমবার ভাসানচরে আসেন।

এ সময় তারা ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের সুযোগ-সুবিধা পর্যবেক্ষণ করতে গেলে তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। ভাসানচরের রোহিঙ্গারা প্রতিমাসে নগদ পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন, এছাড়া মানসম্পন্ন রেশন, কর্মসংস্থান এবং পর্যাপ্ত চিকিৎসার দাবি করেন।

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, সকালে ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিনিধি দল ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের সুযোগ সুবিধা পর্যবেক্ষণ করতে পরিদর্শনে আসেন। তারা হেলিকপ্টার থেকে অবতরনের পর পরই রোহিঙ্গারা প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকাসহ সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ভাঙচুর চালান।

নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) খোরশেদ আলম খান বলেন, প্রতিনিধি দলের দুই সদস্য ভাসানচরে পৌঁছলে রোহিঙ্গারা বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। সেখানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে কি না এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তারা বিক্ষোভ করেছেন।

ভাসানচরের আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি গুচ্ছগ্রামের ‘ফোকাল’ (সমন্বয়ক) এক রোহিঙ্গা নেতা বলেন, জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল ভাসানচরে পৌঁছলে রোহিঙ্গাদের একটি অংশ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় রোহিঙ্গারা ইটপাটকেল ছুড়ে একটি সরকারি কার্যালয়ে ভাঙচুর চালান। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। এর আগে থেকে আছেন আরও প্রায় চার লাখ। বর্তমানে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে ৩৪টি ক্যাম্পে।

ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রথম দফায় ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গাকে নৌবাহিনীর জাহাজে করে ভাসানচর নিয়ে যাওয়া হয়। সব মিলিয়ে এই সংখ্যাটি ১৩ হাজার ছাড়িয়েছে। সরকার সেখানে মোট এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য মানসম্মত আবাসনের ব্যবস্থা করেছে।

পাশাপাশি সেখানে রোহিঙ্গাদের জন্য আয়ের সুযোগ রেখেছে, শিশুদের জন্য শিক্ষা ছাড়াও নানা সুযোগ-সুবিধা আছে। রোহিঙ্গারা শুরুতে ভাসানচরে যেতে রাজি ছিল না। তবে পরে সেখানে সুযোগ-সুবিধা দেখে তাদের সন্তোষ প্রকাশের খবরও এসেছে গণমাধ্যমে।

Exit mobile version